ভারতীয় পাশ্চাত্য কাব্য তত্ত্ব



ভারতীয় পাশ্চাত্য কাব্য তত্ত্ব :-
____________________________

কয়েকটি পরিচিত কাব্যসংজ্ঞা দিয়ে আরম্ভ করা যাক।


প্রথম দিকের আলংকারিকদের মধ্যে

১)অষ্টম শতকে :-

✏'বামন' তাঁর 'কাব্যলংকার'গ্রন্থে কাব্যের সংজ্ঞা নিরূপণ করেছেন:

💌 রীতিরাত্মা কাব্যস্য–কাব্যের আত্মা হল রীতি।’

২)নবম শতকে :-

✏'আনন্দবর্ধন' তাঁর 'ধ্বন্যালোক'-এ বললেন: ‘

💌কাব্যসাত্মা ধ্বনিঃ–কাব্যের আত্মা হল ধ্বনি।


৩)দশম শতকে:-

✏' কুন্তক 'তাঁর 'বক্রোক্তিজীবিত'-এ বলছেন:

💌 ‘বক্রোক্তিঃ কাব্যজীবিতম–বক্রোক্তিই কাব্যের প্রাণ।’

৪) ওই যুগেরই (দশম শতকে ):-

✏ 'ক্ষেমেন্দ্র' তাঁর 'ঔচিতাবিচারচর্চা'গ্রন্থে বলছেন:

 💌‘ঔচিত্যং রসসিদ্ধস্য স্থিরং কাব্যস্য জীবিতম—- রসসিদ্ধ কাব্যের স্থির প্রাণ হল ঔচিত্য।’

৫) চতুর্দশ শতকে :-

✏'বিশ্বনাথ' তাঁর 'সাহিত্যাদর্পণ' গ্রন্থে বললেন:

💌 ‘বাক্যং রসাত্মকং কাব্যম–-রসাত্মক বাক্যই হল কাব্য।’

৬) সপ্তদশ শতকে:-

✏তার অনেক পরে সপ্তদশ শতকে শেষ উল্লেখযোগ্য।

✏ আলংকারিক 'জগন্নাথ' তাঁর 'রসগঙ্গাধর' গ্রন্থের সূচনাতে বলেন :

💌রমণীয়াৰ্থপ্রতিপাদকঃ শব্দঃ কাব্যম— -রমণীয় অর্থের প্রতিপাদন করে যে শব্দ তাই কাব্য।’

৭) সপ্তম শতকের:-

✏ আলংকারিক 'দণ্ডী' বলছেন:

💌‘কাব্যশোভাকরান ধর্মানলংকারান প্রচক্ষতে—- কাব্যের যে ধর্ম কাব্যের শোভা সৃষ্টি করে তাই অলংকার।’

✏আনন্দবর্ধন বলছেন:-

রসবন্তি হি বস্তুনি সালংকারাণি কানিচিৎ।
প্ৰায়েণৈব পরাং ছায়াং বিভ্ৰাল্লক্ষ্যে নিরীক্ষতে।।
অর্থাৎ, কোনও কোনও রাসযুক্ত কাব্যবস্তু অলংকৃত হয়ে প্রায়ই উৎকৃষ্ট কান্তি ধারণ করে কাব্যে লক্ষিত হয়।

✏কুস্তক বলছেন:

উভাবেতাবলংকার্যে তয়োঃ পুনরলংকৃতিঃ।
বক্রোক্তিরেব বৈদগ্ধ্যভঙ্গীভণিতিরুচ্যতে।

শব্দ এবং অর্থ এ দুয়েরই অলংকরণ প্রয়োজন। এদের মধ্যে কুশল ভঙ্গির উক্তি যে বক্রোক্তি তা-ই অলংকার।

৮)একাদশ শতকে:-

✏ 'মৰ্ম্মট' তার 'কাব্যপ্রকাশ' গ্রন্থে বলেন:

💌উপকুর্বন্তি তং সন্তং যে অঙ্গদ্বারেণ জাতুচিৎ।
হারান্দিবদলংকারাস্তো নুপ্ৰাসোপমাদয়ঃ।।
অর্থাৎ, কাব্যের যে প্ৰাণ বিদ্যমান তাকে অঙ্গরূপে। কখনও কখনও হার ইত্যাদির মতো যা অলংকৃত করে সেই অনুপ্রাস উপমা ইত্যাদিই অলংকার।


বাংলা আলোচক :-
বিশ্ব নাথ মাহাত
ডোরান্ডা কলেজ
 রাঁচি বিশ্ব বিদ্যালয়

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

চণ্ডীমঙ্গল ও ধর্মমঙ্গল কাব্যের প্রশ্ন উত্তর

আরন্যক প্রশ্ন উত্তর :-

চর্যা_পদ